মঙ্গলবার, ২৯ মে, ২০১২

আমার কর্নফুলী

আমার সেই আশা পুরন হই নি । বাবা পুরন হতে দেয় নি সেই আশা । ছেলেদের মেছু হতে দেবেন না তিনি । হাতে বই খাতা ধরিয়া দিয়া আমাকে শিক্ষকপাড়ায় নিয়া গেলেন । তার ই অনড় প্রতিজ্ঞায় এবং আম্মুর প্রনোদনার কারনে আমি আর কর্নফুলী নদীর মাঝি হতে পারলাম না । হয়ে গে্লাম অন্য জগত এর মানুষ ।

কুবের পদ্মা নদীর মাঝি ছিল। তার নাম আজ কত ঘরে উচ্চারিত! সবাই তাকে চেনে । আমি যদি কর্নফুলী নদীর মাঝি হতাম, তাহলে কোনো না কোনো সময় এ কারো না কারো চোখে পড়্তাম আমি । আমার জীবন নিয়ে, কপিলা-মালাসমেত আমাকে নিয়ে এ-কালের কোনো মানিক বা অদৈত বা সমরেশ নিদেনপক্ষে সাধন দা একটি কাহিনী লিখে পেলতেন । আমি অমর হয়ে যেতাম । কর্নফুলী নদীর মাছমারা না হতে পারার দুঃখ এখনো আমাকে আনমনা করে ।

সমুদ্রপারেই জম্ম আমার । কিন্ত এখন নদীপারের বাসিন্দা । কর্নফুলীপারের এক ইট-কাঠের বাড়িতে থাকি আমি । কিন্ত কষটে বা আনন্দে আমি বারবার কর্নফুলীর পারে গিয়ে বসি । রাতেই যাই । ধবল জোছনায় নদীতীর, নদীজল, নদীতে দাঁড়ানো জলগাড়ীগুলো ভেসে যায় । আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি । অঝোর বৃষটির ধারা কর্নফুলীর পাড়ে দাড়ানো আমাকে ক্লান্ত করে না , করতে পারে না । কারন পাশে যে কর্নফুলী ।

বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাটি ছুঁয়ে ছুঁয়ে কর্নফুলী এগিয়ে গেছে সাগরে । এই নদীর সঙ্গে সমানত্ররাল রেখায় প্রবাহমান থেকেছে আমার জীবন । একদিন আমার জীবন থেমে যাবে , বইতে থাকবে কর্নফুলী তার আপন নিয়মে- এক যুগ থেকে অন্য যুগে ।